শাখা সমূহ

দুবলার চরে শুটকির মৌসুম শুরু ১ নভেম্বর, রওনা দিচ্ছেন জে‌লে‌রা

১ নভেম্বর থেকে বঙ্গোপসাগর পাড়ে সুন্দরবনের দুবলার চারটি চরে শুরু হচ্ছে শুঁটকির মৌসুম—যা চলবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। টানা পাঁচ মাস সেখানে থাকতে হবে জেলেদের। 

শনিবার থেকেই জাল, দড়ি, ট্রলারসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে সাগরে যেতে শুরু করেছেন উপকূলের জেলেরা। দুই–তিন দিন ধরে উপকূলের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা জেলেরা জড়ো হচ্ছেন মোংলার পশুর নদ ও বঙ্গবন্ধু মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক চ্যানেলে। এখান থেকে বন বিভাগের পাস নিয়ে দল বেঁধে তাঁরা রওনা হচ্ছেন দুবলার চরে।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, শুঁটকির মৌসুমে সাগর পাড়ে জেলেদের অস্থায়ী থাকার ঘর, মাছ শুকানোর চাতাল ও মাচা নির্মাণ করতে হবে। সেসব তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে না সুন্দরবনের কোনো গাছ। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, চরের উদ্দেশে যাত্রার প্রস্তুতি নেওয়া সব জেলেকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হচ্ছে প্রয়োজনীয় সামগ্রী।

এসব তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মোংলা ও রামপালসহ উপকূলের কয়েক জেলার জেলে-মহাজনেরা। তাঁদের ট্রলার তৈরি, মেরামত ও জাল প্রস্তুতে ব্যস্ত বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কাঠমিস্ত্রিরাও। এই মৌসুম ঘিরে কয়েক মাস আগেই বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মিস্ত্রিরা চুক্তির ভিত্তিতে ট্রলার তৈরি, মেরামত ও জাল সেলাইয়ে এসেছেন উপকূলের গ্রামে গ্রামে।

সব প্রস্তুতি শেষে বন বিভাগের পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে জেলেদের নিজ নিজ এলাকা থেকে রওনা হয়ে সরাসরি যেতে হবে দুবলার চরে। যাওয়ার পথে সুন্দরবনের কোনো নদী-খালে প্রবেশ ও অবস্থান করা যাবে না। এ ছাড়া দুবলার চরে অবস্থানকালে সাগর ছাড়া সুন্দরবনের খালে প্রবেশ ও সেখানে মাছ ধরতে পারবেন না তাঁরা।

মোংলা নদী ও পশুর নদে এসে জড়ো হওয়া পাইকগাছার জেলে বসন্ত কুমার মণ্ডল ও মোংলার জেলে বেল্লাল শেখ প্রথম আলোকে বলেন, জাল, নৌকা, খাবারসহ ঘর নির্মাণের সব সরঞ্জামা নিয়ে দুই দিন ধরে তাঁরা মোংলায় অবস্থান করছেন। বন বিভাগের কাছ থেকে পাস নিয়ে দুবলার চরে রওনা হবেন। সেখানে পাঁচ মাস অবস্থান করে মাছ ধরার পর শুঁটকি তৈরি করবেন। কেউ শুক্রবার রাত ১২টার পর রওনা দিয়েছেন। আবার কেউ শনিবার সকাল ও বিকেলে। এভাবে দলে দলে জেলেরা ছুটবেন সাগরে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শুঁটকি মৌসুম ঘিরে উপকূলের বিভিন্ন এলাকার ১০ সহস্রাধিক জেলে সমবেত হবেন দুবলার চরে। দুবলার আলোরকোল, মাঝেরচর, শ্যালার চর থেকে প্রায় দুই হাজার ট্রলার নিয়ে তাঁরা গভীর সাগরে গিয়ে মাছ ধরবেন। এরপর সেসব মাছ দিয়ে শুঁটকি তৈরি করবেন তাঁরা।

এ বছর চরে ১ হাজার ৩০টি জেলেঘর, ৬৩টি ডিপো ও ৯৬টি দোকানঘর স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, গত শুঁটকির মৌসুমে দুবলার চর থেকে বন বিভাগের রাজস্ব আদায় হয়েছিল সাড়ে চার কোটি টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার পাঁচ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে।

Comments

    Report

    Please Select a problem
    If someone is in immediate danger, get help before reporting to us. Don't wait.